Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

খাদ্য নিরাপত্তা ও বিপণন ব্যবস্থাপনা

খাদ্য নিরাপত্তা ও বিপণন ব্যবস্থাপনা

কাজী আবুল কালাম

মানুষ ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য খাবার গ্রহণ করে। এটি তার মৌলিক অধিকার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ প্রতিবেলায় যে খাবার খাচ্ছে, তা সহজলভ্য কি না এবং তা নিরাপদ কি না? বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। তবে একটি বিষয় ভেবে দেখতে হবে; তা হচ্ছে দেশের প্রতিটি মানুষ কি সহজে খাবারের নাগাল পাচ্ছে? এ বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, খাদ্যের উৎপাদন পরবর্তী যে ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ খাদ্যের বিপণন ব্যবস্থাপনা যথাযথ হলে ভোক্তা তথা মানুষের নিকট তা সহজেই পৌঁছে যায়।


দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে প্রাধান্য প্রদান করে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন নীতি কৌশল এবং বাস্তবানুগ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও খাদ্যের নিরাপদতা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এর পাশাপাশি সকল জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করাসহ পুষ্টি স্তর উন্নয়নও অন্যতম প্রধান কাজ। সরকার বহুমাত্রিক উন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কৃষিকাজ বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগণের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। আধুনিক জাত ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ বছরব্যাপী নানা রকম ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে, যা দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে (এসডিজি) সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার সকল প্রকার দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুধা অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, পুষ্টি উন্নয়ন এবং টেকসই কৃষির সম্প্রসারণ (এসডিজি-২) কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে। 

 
যেকোনো বিপণন ব্যবস্থাপনার মূল বিষয় হলো উৎপাদক, উৎপাদন সম্পৃক্ত অংশীজন, উৎপাদন পরবর্তী অংশীজন এবং সর্বশেষে ভোক্তার কাছে পণ্যটি পৌঁছে দেয়া। কৃষিপণ্য বিপণন ব্যবস্থাপনাও এর ব্যতিক্রম নয়। আর সে লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে উৎপাদক, বিক্রেতা ও ভোক্তা সহায়ক কৃষি বিপণন ব্যবস্থা এবং   কৃষি ব্যবসা উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা। এজন্য কৃষিপণ্যের চাহিদা ও জোগান নিরূপণ, মজুদ ও মূল্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, বাজার অবকাঠামো জোরদারকরণ, কৃষিপণ্যের বিপণন ব্যবস্থাপনায় সহায়তা প্রদান, কৃষক দল গঠন, উৎপাদক ও বিক্রেতার সাথে ভোক্তার সংযোগ স্থাপন, কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়তা প্রদান, কৃষিপণ্য রপ্তানিতে সহায়তা প্রদান, কৃষিপণ্য ও কৃষি উপকরণের মজুদ বা গুদামজাতকরণ, পণ্যের গুণগতমান, মেয়াদ, মোড়কীকরণ ও সঠিক ওজনে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ইত্যাদি কাজে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সম্পৃক্ত রয়েছে।


মানুষ সহজে খাবার পাচ্ছে কি না; তা নির্ণয়ের জন্য কয়েকটি অনুষঙ্গ বিবেচনা করতে হয়। তা হলো : প্রাপ্যতা (availability), অভিগম্যতা (accessibility), ব্যবহার  (utilization) ও টেকসই  (stability)। এ সকল অনুষঙ্গই কৃষি বিপণনের সঙ্গে সর্বোতভাবে সম্পৃক্ত। খাদ্যের নিরাপদতার প্রথম শর্তই হলো খাদ্যের প্রাপ্যতা। খাদ্যের প্রাপ্যতা বলতে বোঝাবে খাদ্যের সরবরাহ, উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, খাদ্য আমদানি ইত্যাদি। এর সঙ্গে খাদ্যের সংগ্রহোত্তর ক্ষতির বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হয়। বিপণন ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করা হলেই কেবল ভোক্তার কাছে খাদ্যের প্রাপ্যতা সহজলভ্য হবে। শুধু খাদ্যের প্রাপ্যতা থাকলেই হবে না, এর অভিগম্যতাও গুরুত্বপূর্ণ। অভিগম্যতা আবার কয়েকভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- বাস্তবিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক। অর্থাৎ ভোক্তার বিশেষ করে অরক্ষিত পরিবারের (vulnerable household)  ক্ষেত্রে খাদ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় (নিজস্ব উৎপাদন বা বাজারের মাধ্যমে) অবকাঠামোগত উপস্থিতি নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ এর ব্যাঘাত ঘটতে পারে যদি বাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হয়। এ বিষয়টি দেখা যেতে পারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পল্লী এলাকাতে। তবে শহরের ক্ষেত্রে খাবারের নিরবচ্ছিন্ন বাজার সরবরাহ শৃঙ্খলের অবাধ প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। এক্ষেত্রে বিপণন নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অপরদিকে অর্থনৈতিক অভিগম্যতার মূলকথাই হলো ভোক্তার আয় এবং পণ্যের মূল্য। বিপণন ব্যবস্থাপনার মূল চ্যালেঞ্জই হলো এ জায়গায়। অর্থাৎ কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং ভোক্তার যৌক্তিক মূল্যে খাদ্য ক্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি। সামাজিক অভিগম্যতা অনেকাংশে নির্ভর করে ব্যক্তির একক পর্যায়ে অভিগম্যতা ও খাবারের ভোগবাদিতা; বিশেষ করে পরিবারের মধ্যে লিঙ্গ, গোত্র, বয়স, স্বাস্থ্যগত অথবা সামাজিক বিষয়াদি ইত্যাদি অভিগম্যতার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। তৃতীয় অনুষঙ্গটি হলো খাবারের ব্যবহার। একজনের পুষ্টি অবস্থা বিবেচনা করা হলে এ বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করা যায়। একটি পরিবারের হয়তোবা সামর্থ্য আছে প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার কেনার; কিন্তু ক্রয়কৃত খাবারের সম্পূর্ণ ব্যবহারের অক্ষমতা রয়েছে। এক্ষেত্রে খাবারের মান ও পরিমাণ, খাবার প্রস্তুতি, খাবার গ্রহণের সংস্কৃতি, খাবার সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হয়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এ ক্ষেত্রেও ফল, সবজি, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করে খাবারের বৈচিত্র্যতা আনয়ন করে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। চতুর্থ অনুষঙ্গটি হলো বর্ণিত ৩টি অনুষঙ্গের ধারাবাহিক সক্ষমতা বা টেকসই খাবারের নিশ্চয়তা প্রদান করা। এ বিষয়টি অনেকাংশেই সময়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এক্ষেত্রেও সময়ের পরিক্রমায় উৎপাদন ব্যয়, ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যবর্তী ব্যবধান, দর, পরিমাণ, জোগান-চাহিদা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বাজারের স্থিতাবস্থা রক্ষা তথা খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা পালন করে।


বিপণন ক্রেতার চাওয়া এবং লাভজনকভাবে তার নিকট দ্রব্যটি পৌঁছে দেয়াকে প্রাধান্য দেয়। এ বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, বিপণন ব্যবস্থাপনা পুরোটাই ক্রেতাকেন্দ্রিক। ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন করা প্রয়োজন। বিপণন ব্যবস্থা তখন টেকসই হবে যখন এখানে অন্তর্ভুক্ত সকল অংশীজন লাভ করতে সক্ষম হবে। কৃষি বিপণন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষক কর্তৃক উৎপাদিত পণ্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোর মাধ্যমে ভোক্তার নিকট পৌঁছে দেয়া এবং উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণের বিভিন্ন পর্যায়ে মূল্য ও চাহিদা বিষয়ে তথ্য প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ। বিপণন ব্যবস্থাপনায় আরও যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো: বাজার অবকাঠামো, পণ্য পরিবহন, পণ্য সংরক্ষণের সুবিধা এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বাজার কারবারি, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতা। কৃষকের পণ্য উৎপাদনের নিমিত্ত ব্যবহৃত উপাদানসমূহ স্থানান্তরের জন্য সম্পাদিত সকল ক্রিয়াকর্মও কৃষি বিপণনের অংশ (আচারিয়া ও আগারওয়াল, ১৯৮৮)। কারণ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণাদিও কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণের জন্য ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের কৃষক ছোট আয়তনের জমির মধ্যে আবাদ করে এবং তার দৃষ্টিও সীমাবদ্ধ থাকে স্থানীয় বাজারের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ের সুযোগ প্রাপ্তির উপর। পক্ষান্তরে স্থানীয় বাজারসমূহ সংগঠিত নয়। ফলে বাজারকারবারি, ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীরা খুব সহজেই কৃষকের পণ্য ক্রয় করে এবং উক্ত পণ্য একাধিক স্তর পরিভ্রমণ করে ভোক্তার নিকট পৌঁছে। সংগতকারণেই ভোক্তা পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে বেশি দামে ক্রয় করতে বাধ্য হয়। কৃষিপণ্যের বিপণন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্প্রতি ৪ আগস্ট ২০২১  মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কৃষিপণ্য কেনাবেচায় মোবাইল অ্যাপ ‘সদাই’ এর উদ্বোধন করেন। এ অ্যাপটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য হ্রাস, কৃষিপণ্যের গুণগত মান নিশ্চিতে কাজ করবে। একইসাথে, ভোক্তারা যাতে না ঠকে, প্রতারণার শিকার না হয় এবং নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত পণ্য পায়-তাতে অ্যাপটি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণসহ সামগ্রিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নেয়া হচ্ছে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।


বৈশ্বিকভাবে ৬৯০ মিলিয়ন মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে, প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নেই এবং প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ খাদ্যের বৈচিত্র্যতা এনে সুষম খাবার খেতে পারে না। স্বাস্থ্যসম্মত ও ক্রিয়াশীল জীবনের জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু পৃথিবীর ৩ বিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ৪০% মানুষের পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহের সক্ষমতা নেই (এফএও, ইফাদ, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ২০২০)। পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহের অক্ষমতার জন্য কৃষিপণ্যের মূল্য একমাত্র প্রতিবন্ধকতা নয়। এ জন্য প্রয়োজন সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন। পুষ্টিকর খাবার প্রস্তুতিতে যে সমস্যা আছে তা দূর করতে হবে, খাবারের বৈচিত্র্য আনতে হবে, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার খেতে হবে, পুষ্টিকর খাবার বিষয়ে জ্ঞানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এসব বিষয়ে সরকারের নীতি ও কৌশল প্রণয়নে বিবেচনা করতে হবে।


বাংলাদেশের মানুষের এখন খাবারের প্রাপ্যতা থাকলেও মূল চ্যালেঞ্জের জায়গাটি হলো নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের জোগান দেয়া। জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়নও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ প্রেক্ষাপটে নিরাপদ খাবার উৎপাদনের জন্য উত্তম কৃষি চর্চার কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া বিপণন ব্যবস্থাপনার যে কোনো পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান অক্ষুণ্ন রাখার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।


আশা করা যায় সবার প্রচেষ্টায় এবং সরকারের যথাযথ নীতি ও কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিসহ দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা বিধান ও নিরাপদ খাবার সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও কর্মক্ষম জাতিতে পরিণত করা সম্ভব হবে।

লেখক : পরিচালক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭২৭৫৩১১০০, ই-মেইল : kaziabulkalam@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon